দীর্ঘ আট বছর ধরে চলতে থাকা আইনি জটিলতার অবসান ঘটিয়ে উচ্চপ্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত মেধাতালিকা প্রকাশের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। গত ২৮ আগস্ট বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ রায় ঘোষণা করে জানিয়েছে, স্কুল সার্ভিস কমিশনকে (এসএসসি) উচ্চপ্রাথমিকে ১৪,০৫২ পদে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। চার সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত মেধাতালিকা প্রকাশ করে তার পরের চার সপ্তাহের মধ্যে কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দিতে হবে নিয়োগপত্র। অর্থাৎ পুজোর আগেই নিয়োগপত্র পেতে চলেছেন ১৪ হাজারের বেশি চাকরিপ্রার্থী। উল্লেখ্য, উচ্চপ্রাথমিকে ১৪,৩৩৯ জন শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০১৬ সালে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল। ঐ বছরই স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্ট (এসএলএসটি) আয়োজিত হয়। মোট ২ লক্ষ ২৮ হাজার ৬৭৮ জন চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। তিন বছর পর ২০১৯ সালে এসএসসির তরফে ইন্টারভিউয়ের জন্য তালিকা প্রকাশ করা হয়। তারপর ঐ বছরই প্রকাশিত হয় মেধা তালিকা। কিন্তু একাধিক বেনিয়মের অভিযোগে উঠলে কলকাতা হাইকোর্টে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। সংরক্ষণ নীতি না মানা, ওএমআর শিটে গোলযোগ ইত্যাদি অভিযোগ তোলেন মামলাকারীরা। যাবতীয় অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২০ সালে সম্পূর্ণ মেধাতালিকা বাতিলের নির্দেশ দেয় বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের সিঙ্গল বেঞ্চ। শেষ পর্যন্ত মামলা গড়ায় বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানে প্রায় তিন বছর মামলার শুনানি চলার পর ২০২৩ সালে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ সংশোধন করে প্যানেল প্রকাশ করার অনুমতি প্রদান করে ডিভিশন বেঞ্চ। পরবর্তীকালে বিচারপতিদের বিচারক্ষেত্র পরিবর্তন হওয়ায় মামলাটি আসে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানে অভিযোগ ওঠে, ২০২৩ সালে নিয়ম না মেনে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া থেকে ১,৪৬৩ জনের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের ১৮ জুলাই মামলার শুনানি শেষ হয়। অবশেষে ২৮ আগস্ট রায় ঘোষণা করে বেঞ্চ জানিয়ে দিল, এসএসসির তরফে সেই ১,৪৬৩ জন প্রার্থীকে নিয়েই ১৪,০৫২টি পদের জন্য চূড়ান্ত মেধাতালিকা প্রকাশ করে সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।